ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: মোঃ পারভেজ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ঘাস নিধনের বিষ খাইয়ে ছয় বছরের শিশু মাহমুদাকে হত্যার অভিযোগে তার সৎমা বন্যা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৬। শনিবার (৯ মার্চ) দিবাগত রাতে চৌকস অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শিশু হত্যার মর্মান্তিক ঘটনা
জানা গেছে, গত ১ মার্চ সন্ধ্যায় শিশু মাহমুদা তার সৎমার কাছে শরবত খেতে চায়। তখন বন্যা আরসির সঙ্গে ঘাস নিধনের বিষ মিশিয়ে তাকে খাইয়ে দেয়। শরবত খাওয়ার পরপরই মাহমুদা ছটফট করতে শুরু করে।
বিষক্রিয়ার পর বন্যা পরিবারের সদস্যদের জানায়, "মাহমুদা ভুলে আরসির বদলে ঘাস পোড়ানো ওষুধ খেয়ে ফেলেছে।"
শিশুটিকে প্রথমে কোটচাঁদপুর উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে যশোর সদর হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আইসিইউতে বেড না থাকায় পরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দীর্ঘ ছয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) মাহমুদা মারা যায়।
মৃত্যুর আগে শিশুটির বক্তব্য
মাহমুদা মৃত্যুর আগে জানিয়েছিল, তার সৎমা ঘরের ভেতরে নিয়ে তাকে আরসি খাওয়ায়। পরিবারের লোকজন তার কথাগুলো ভিডিও করে রাখে।
শিশুর পরিবারের অভিযোগ
শিশুর বাবা শাহিন আলম বলেন,
- "আমি বাজার থেকে ফিরে দেখি মাহমুদা শুয়ে কাতরাচ্ছে। জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, সৎমা বন্যা তাকে শরবত খাওয়ায়। এরপর বন্যাকে প্রশ্ন করলে সে অসংলগ্ন কথা বলতে থাকে।"
- "ঘটনার পাঁচ দিন পর বন্যা ‘আত্মহত্যার নাটক’ সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং পরে সপরিবারে পালিয়ে যায়।"
গ্রেফতার ও আইনগত ব্যবস্থা
শিশুর বাবা শাহিন আলম বাদী হয়ে বন্যা খাতুন ওরফে হুমায়রার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
কোটচাঁদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন,
- "শিশু হত্যার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত আসামি বন্যাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।"
শিশুটির মর্মান্তিক মৃত্যু এলাকায় শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।